নিজস্ব প্রতিবেদক :
কুমিল্লার মুরাদনগরে পূর্ব বিরোধ ও ভোট না দেয়ার অজুহাতে ইউপি (ইউনিয়ন পরিষদ) চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সালিশে মরিয়ম বেগম নামে এক মানবাধিকার কর্মীকে মারধর ও শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে।
উপজেলার নবীপুর (পশ্চিম) ইউপি চেয়ারম্যান ভিপি জাকির হোসেনের সামনে ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন ও তার দলবল এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে আহত ওই নারী দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজারের উত্তর ত্রিশ এলাকার একটি প্রতিষ্ঠানে এই ঘটনা ঘটে। মারধরের সময়ে ধারণকৃত সিসিটিভি ফুটেজ ভাইরাল হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, কুমিল্লার মুরাদনগরে পূর্ব বিরোধ এবং গত ইউপি নির্বাচনে ভোট না দেয়ার অভিযোগ এনে গত ২৮জুন রাতে মুরাদনগর উপজেলার ত্রিশ গ্রামের নারী মানবাধিকার কর্মী এবং ইন্টারন্যাশনাল লিগ্যাল এইড ফাউন্ডেশনের কর্মী মরিয়ম বেগমকে লোক মারফত কোম্পানীগঞ্জ বাজারে ডেকে আনেন ইউপি চেয়ারম্যান ভিপি জাকির হোসেন। এ সময় এক ব্যবসায়ীর দোকানে সালিশ বসে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, সালিশ চলাকালে নবীপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ভিপি জাকির হোসেনের উপস্থিতিতে ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন তার দলবল নিয়ে ওই নারীকে শ্লীলতাহানিসহ মারধর করেন। এক পর্যায়ে আত্মরক্ষায় ওই নারী এদিক সেদিক ছোটাছুটি করলেও হামলাকারীরা তাকে আরও নির্যাতন করেন।
নির্যাতনের শিকার মরিয়ম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান ভিপি জাকির হোসেন পরিকল্পিতভাবে আমাকে ডেকে নিয়ে সালিশে বসেন। এ সময় চেয়ারম্যানের সামনেই তার ভাতিজা ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন এবং তার দলবল আমাকে শ্লীলতাহানি এবং নির্যাতন করেন। আমি আত্মরক্ষার্থে সালিশ থেকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে, তারা আমাকে ধরে এনে ব্যাপক নির্যাতন করেন।
একপর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আশপাশের লোকজন উদ্ধার করে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করেন। এ ঘটনায় প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের নির্দেশে থানায় মামলা নিচ্ছে না পুলিশ। আমি এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এদিকে ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেনের দাবি, তাকে গালমন্দ করায় তিনি মারধর করেছেন।
ইউপি চেয়ারম্যান ভিপি জাকির হোসেন বলেন, পূর্বের সামান্য একটি বিরোধ নিয়ে আমরা বৈঠকে বসেছিলাম। এ সময় আমরা তা মীমাংসা করে দিয়েছি। ভিডিওতে দেখা নারীকে মারধরের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ওসি আবুল হাশিম বলেন, ওই নারী শুরুতে একটি সাধারণ ডায়েরি করতে এসেছিলেন। কিন্তু এ বিষয়ে আমরা তাকে নিয়মিত মামলা দেয়ার পরামর্শ দিয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।